ব্যাংক সিনিয়র অফিসারের রিয়েল ভাইভা জানুন

সমন্বিত ৮ ব্যাংক সিনিয়র অফিসার
নাম- মোঃ আনিসুর রহমান
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়
অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করালাম, সালাম দেয়ার পর চেয়ারম্যান স্যার বসতে বললেন৷ বসে ধন্যবাদ জানালাম স্যারকে৷
চে- নাম কী?
আমি- উত্তর করলাম
চে- কোথা থেকে পড়েছেন?
আমি- উত্তর করলাম
চে- সাবজেক্ট?
আমি- উত্তর করলাম
চে- এই সাবজেক্টে পড়ে ব্যাংক সেক্টরে কী অবদান রাখবেন?
আমি- আমার সেক্টরে যেসব কৃষক জড়িত আছেন, তাদের ব্যবসার ধরণ সম্পর্কে আমি সম্মক অবগত আছি৷ কোন ধরনের ব্যবসায় তাদের ঋণপ্রদান করলে তারা দ্রুত লাভবান হতে পারবে, সে সম্পর্কে আমি জানি৷ তাদের ব্যবসার প্রসারে এবং দেশের খাদ্য স্বয়ংসম্পূর্ণতা বজায় রাখতে ঋণদানে আমি আমার অর্জিত জ্ঞান কাজে লাগাবো৷
এক্সাটার্নাল, 1- আপনার প্রথম চয়েজ কী?
আমি- সোনালী ব্যাংক৷
এক্স,1- কেন সোনালী ব্যাংক প্রথমে?
আমি- (সোনালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান আর এমডির নাম ছাড়া এর কার্যক্রম সম্পর্কে কিছুই জানা নেই আমার,শুরু করলাম চাপাবাজি) স্যার, সোনালী ব্যাংক সারাদেশে ব্যাপকভাবে বিস্তৃত, প্রায় প্রত্যেক উপজেলায় এমনকি ইউনিয়ন পর্যায়েও এর শাখা রয়েছে৷ আমাদের গ্রামের পাশেই ছিলো সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা৷ ছোটবেলা থেকে এই ব্যাংক দেখে, এর মাঠে খেলে বড় হয়েছি, ছোটবেলায় মনে করতাম সারা বাংলাদেশে বুঝি একটাই ব্যাংক আছে, সেটা সোনালী ব্যাংক৷ তাই সোনালী ব্যাংকের প্রতি একটা ফেসিনেশন কাজ করে স্যার৷
এক্স1- তাহলে বলুন সোনালী ব্যাংকের শাখা কয়টি?
(আগের প্রশ্নের উত্তরে চাপাবাজি করতে গিয়ে নিজেই নিজের জন্য খাল কেটেছি, এই প্রশ্ন কুমির হয়ে এলো, উত্তর একেবারেই জানা নেই)
আমি- স্যরি স্যার!
চেয়ারম্যান স্যার- সোনালী ব্যাংক সম্পর্কে দাঁড়িয়ে পাঁচ মিনিট ইংরেজিতে স্পিচ দেন৷
আমি- দাঁড়িয়ে খুব স্পিডে বলা শুরু করলাম, যদ্দুর জানি, তার পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু থেকে শুরু করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে, কিছুক্ষণ বকবক করলাম৷
চেয়ারম্যান- সোনালী ব্যাংকের এমডির নাম কী বললেন?
আমি- উত্তর করলাম!
চেয়ারম্যান- বাংলাদেশ ব্যাংকের কাজ কী?
আমি- মুদ্রা প্রচলণ, মুদ্রা নিয়ন্ত্রন, মুদ্রার উপযোগী বাজার তৈরী, বানিজ্যিক ব্যাংকের নীতি প্রণয়ন৷
বানিজ্যিক ব্যাংকের নাম মুখে নেয়ার সাথে সাথেই স্যারের প্রশ্ন৷
চেয়ারম্যান স্যার- বানিজ্যিক ব্যাংক কাকে বলে?
আমি- যে সব ব্যাংক সরাসরি জনগণের সেবা করে, তাদের আমানত গ্রহণ করে এবং তাদের ঋণদান করে তাকে বানিজ্যিক ব্যাংক বলে৷
স্যার- তাহলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক কি জনগণের সেবা করে না?
আমি – স্যার, করে তবে তা পরোক্ষভাবে৷ বানিজ্যিক ব্যাংক জনগণের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সংশ্লিষ্ট থেকে সেবা দান করে৷
এক্স2- তোমার প্রথম পছন্দ তো সোনালী ব্যাংক, সোনালী ব্যাংকের একটা নেগেটিভ সাইড বলতো!
আমি- স্যার হলমার্ক কেলেঙ্কারী৷
এক্স2- হলমার্ক কেলেঙ্কারীতে জড়িতদের কি শান্তির বিধান করতে পেরেছিল সরকার?
আমি- জ্বি স্যার করতে পেরেছে৷
এক্সটা- জড়িত সবাই কি শান্তির আওতায় এসেছে?
আমি- এবার আমি কনফিউজড হয়ে যাচ্ছিলাম তারপরও জোর দিয়ে বললাম, জ্বি স্যার সবাই এসেছে৷
সরকার শব্দটা আসতেই চেয়ারম্যান স্যার আবার প্রশ্ন করা শুরু করলেন
চেয়ারম্যান স্যার- আচ্ছা, বর্তমান সরকারের তিনটি ব্যর্থতা বলুন তো!
আমি- ১. বঙ্গবন্ধুর খুনিদের দেশের বাহিরে থেকে দেশে এনে শান্তিদিতে না পারা৷
২. এতোদিনেও রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধান করতে না পারা৷
চেয়ারম্যান স্যার- উত্তর দেয়া অবস্থায় স্যার প্রশ্ন করলেন, দেশে কি দুর্নীতি আছে?
আমি- আমতা আমতা করে, আছে স্যার কিছুটা৷
চেয়ারম্যান স্যার- ব্যাংক সেক্টরের সবচেয়ে বড় দুর্নীতি ঋণখেলাপী, ঋণখেলাপীর সমাধান করতে না পারাকে কি ব্যর্থতা বলবেন না?
আমি- এটাও একধরনের ব্যর্থতা, তবে জড়িতদের শাস্তির আওতায় এনে সমস্যার সমাধানে সরকার কাজ করে যাচ্ছে৷
চেয়ারম্যান স্যার- এবার সরকারের তিনটা সফলতার কথা বলুন৷
আমি- ১, যুদ্ধাপরাধীর বিচার, ২.পদ্মাসেতু নির্মাণ, ৩. ভারত ও মায়ানমারের সাথে সমুদ্রজয়৷
এক্স2- বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে জড়িত কয়েকজনের নাম বলুন৷
আমি- কর্নেল ফারুক, কর্নেল আব্দুর রশিদ, মেজর শরিফুল হক ডালিম, কে এম মহিউদ্দিন আহমদ৷
এক্স2- বঙ্গবন্ধুকে গুলি করেছিলো কে?
আমি- মেজর বজলুল হুদা ও মেজর নূর চোধুরী৷
চেয়ারম্যান স্যার- বাংলাদেশে ব্যাংক কয়টি?
আমি- ৬১ টি স্যার
চেয়ারম্যান স্যার- সরকারি বানিজ্যিক ব্যাংক কয়টি?
আমি- ছয়টি৷
চেয়ারম্যান স্যার- বিদেশী ব্যাংক কয়টি?
আমি- সাতটি
চেয়ারম্যান স্যার- কয়েকটি বিদেশী ব্যাংকের নাম বলুন তো?
আমি- স্ট্যাডার্ড চার্টাড ব্যাংক ছাড়া অন্যকোন ব্যাংকের নাম বলতে পারিনি৷
চেয়ারম্যান স্যার- দুধের কম্পোজিশন জানেন?
আমি- জ্বি স্যার৷
চেয়ারম্যান স্যার- গরুর দুধে ফ্যাট পার্সেন্টেজ কত বলেন তো?
আমি- 3.5-3.7
চেয়ারম্যান স্যার- জিডিপিতে প্রাণিসম্পদের অবদান কতটুকু? এর আগে বলুন জিডিপিতো কৃষির অবদান কতুটুকু?
আমি- কৃষির অবদান ১২.০৭%এবং প্রাণি সম্পদের অবদান- ১.৯৮%
চেয়ারম্যান স্যার- এটা কই থেকে পেলেন? সোর্স বলেন?
আমি- বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের ৮ই ফেব্রুয়ারী প্রকাশিত ২০২০-২১ এর বার্ষিক হিসাব৷
চেয়ারম্যান স্যার এক্সটার্নাল তিনের দিকে তাকিয়ে বললেন, আপনি প্রশ্ন করবেন? এক্সটার্নাল স্যার বললেন থাক আর প্রশ্ন করার দরকার নেই৷ চেয়ারম্যান স্যার বললেন তাহলে তাকে ছেড়ে দেই? সবাই বললেন ছেড়ে দেন স্যার৷
তারপর স্যার আমাকে বললেন, আপনি এবার আসুন৷ আমি সালাম দিয়ে বের হয়ে আসলাম৷
আনুমানিক সময়- আমি ভাইবা বোর্ডে যখন ঢুকি তখন সকাল প্রায় নয়টা পয়তাল্লিশ, বোর্ড থেকে বের হয়ে নিজের মোবাইল নিয়ে দেখলাম দশটা দশ বাজে৷ আনুমানিক 18-20 মিনিট ছিলাম বোর্ডে৷
একটা পরামর্শ- সকাল বেলা কথা বলতে গিয়ে গলা শুকিয়ে যাচ্ছিলো, কেউ ইচ্ছা করলে পানি নিয়ে প্রবেশ করতে পারবেন৷ অথবা ভাইবা শুরুর আগে পানি খেয়ে কারো সাথে কথা বলে একটু প্র্যাকটিস করবেন৷
বোর্ড – ৪
সিরিয়াল-৫
( পাঁচজনের মধ্যেই তিন নাম্বার জন আসেনি, এর পরে কেউ মিস গেছে কিনা সেটা জানি না)
চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য এই গ্রুপে জয়েন করুন।
Post Views: ৩৪৫