আজ বুধবার ২০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
বিসিএসের কোন ক্যাডারকেই নিরঙ্কুশভাবে ভাল কিংবা মন্দ বলা যাবে না।
প্রতিটিরই ভিন্ন ভিন্ন সুবিধা-অসুবিধার দিক আছে। আপনার ব্যক্তিত্ব, চাওয়া,স্বপ্নের সাথে বিভিন্ন ক্যাডারের সুবিধা অসুবিধার দিকটি সমন্বয় করেই আপনি আপনার জন্য শ্রেষ্ঠ ক্যাডার নির্বাচন করবেন।
আপনার সিদ্ধান্ত গ্রহণকে সহজ করতে আলোচিত কিছু ক্যাডারের ইতি ও নেতিবাচকতা সংক্ষপে তুলে ধরছিঃ
পুলিশঃ
ছোটবেলা থেকে মুগ্ধনয়নে হুশ করে বেরিয়ে যাওয়া পুলিশের গাড়ি, ইউনিফরম, র্যাংকব্যাজ দেখে আসছেন, দেশী-বিদেশী লেখকদের উপন্যাস /ফিকশন পড়ার সময় নিজেকে পুলিশ অফিসার হিসেবে ভেবে কল্পনার রাজ্যে ভেসে বেড়িয়েছেন। বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে যোগদান করে আপনিও হতে পারেন অনেক স্বপ্ন – কল্পনার সেই বাহিনীর একজন উর্ধবতন কর্মকর্তা।
সুবিধাঃ
———–
১. বিপন্ন মানুষকে সরাসরি সাহায্যের হাত বাড়ানো ও বিপদমুক্ত করার ক্ষমতা।
২. অন্যান্য ক্যাডারের মতো মূল বেতনের পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার ভাতা।যেহেতু অফিসের বাইরে কাজ থাকে বেশি সেক্ষেত্রে বেতনের অতিরিক্ত দৈনিক ভাতা সবচেয়ে বেশি । ঢাকার বাইরে এর হার ৫০০, ঢাকায় ৬৫০ টাকা ।বিশেষ ভাতাও থাকবে যেমন র্যাবে অতিরিক্ত ৭০%, ট্রাফিকে ৩০%, ডিএমপিতে বিশেষ ভাতা প্রায় ৭০%, সি আই ডি, পুলিশ হেডকোয়াটার্সএ ৫০% ইত্যাদি ।
৩.রেশনঃ ৪ জনের পরিবারের জন্য পর্যাপ্ত রেশন দেওয়া হয়।
৪. সার্কেল বা জেলার দায়িত্ব পেলে সুপরিসর- সুসজ্জিত বাংলো পাওয়া যায়। সম্প্রতি পুলিশের জন্য নতুন নতুন আবাসিক প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে।
৫.প্রচুর বিদেশে প্রশিক্ষণ ও ভ্রমণের সুবিধা।
৬.অন্যান্য ক্যাডারদের মতো বিপুল সংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা এখন উচ্চ শিক্ষার্থে বিদেশ গমন করছেন। পুলিশে ট্রেনিং শেষে রাজশাহী বিশ্বদ্যিালয় থেকে পুলিশ সাইন্সে মাস্টার্স দেওয়া হয়। পাবলিক ভার্সিটির একটা মাস্টার্স ডিগ্রী!! কম কি! এছাড়া ও এফ বি আই এর মতো সংস্থার সাথেও পড়াশুনা ও ট্রেনিং এর সুযোগ পাওয়া যায়।
৮. ন্যুনতম তিনবার জাতিসংঘ শান্তি মিশনে যেয়ে বিশ্বশান্তি তে অবদান রাখার পাশাপাশি নিজে কোটিপতি হবার সুযোগ।
৯.মেয়েদের অগ্রাধিকারঃ অনেকেই ভুল ধারনা পোষণ করেন যে, পুলিশের চাকুরী মেয়েদের জন্য উপযুক্ত নয়। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি বাংলাদেশ পুলিশে নারী সদস্যরা যে সম্মান এবং অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন, অন্য কোন পেশায় সে মর্যাদা তারা ভোগ করেন না।
১০.আন্তঃবাহিনী পর্যায়ে কাজ করার সুযোগ
১১.পদোন্নতি ভাল। ভবিষ্যতে উপরের দিকে পদসংখ্যা বাড়লে পদোন্নতি আরো তরান্বিত হবে।
১২. ইউনিফরম ভাল না লাগলে সিভিল ড্রেসে এসবি, ডিবিতে কাজের সুযোগ। তাছাড়া
পুলিশ কর্মকর্তাদের জন্য এনএসআই, দুদক প্রভৃতি সংস্থায় প্রেষণে দায়িত্ব পালনের সুযোগ রয়েছে।
১৩.পারিবারিক সুরক্ষাঃ আমি নিজে পুলিশ ক্যাডারে আছি বলে ভাববেন না যে বাড়িয়ে বলছি- আপনি পুলিশ হয়েছেন মানে আপনি ও আপনার পরিবারের সদস্যবর্গ সমাজের খারাপ মানুষদের হাত থেকে নিরাপদ। আপনার বা আপনার স্বজনদের ক্ষতি করার চিন্তা দূরে থাকুক, বরং অতীতে কোন ভুল হয়ে থাকলে সেজন্য এসে ক্ষমা চেয়ে যাবে।
অসুবিধাঃ
—————
১. কাজের প্রেসার খুব বেশি। শুক্র-শনি বলে কিছু নেই, কখনো কখনো কর্মক্ষেত্রে ঈদও করতে হতে পারে।
২. ছুটি কম
৩. পদোন্নতি বিষয়ক জটিলতা বিদ্যমান। তবে আশা করা যায় শিগগির এই জটিলতা মিটে যাবে।
৪.স্থানীয় পর্যায়ে বিভিন্ন প্রেশার গ্রুপের চাপের যে বিষয়টি খুব আলোচিত হয়, তবে আমরা বর্তমানে যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের পথে এগিয়ে চলেছি, সেখানে সকল প্রকার চাপমুক্ত কর্মদক্ষ একটি পুলিশ প্রশাসনই বিদ্যমান থাকবে, নিশ্চিত থাকুন।
ক্যারিয়ার প্রসপেক্টসঃ
———————————
আপনি চাকুরিতে যোগদানের পর ট্রেনিং শেষে আপনি দুই/তিনটি থানার সমন্বয়ে গঠিত সার্কেলের দায়িত্ব পাবেন। এরপর পদোন্নতি পেয়ে হবেন এডিশনাল এসপি বা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার। এরপর একটি জেলার আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব নিতে পুলিশ সুপার পদে দায়িত্ব পাবেন। এরপর যথাক্রমে এডিশনাল ডিআইজি, ডিআইজি, এডিশনাল আইজি, আইজিপি পদে উন্নীত হবার সুযোগ আপনার জন্য অবারিত থাকবে।
প্রশাসনঃ
সুবিধা
———-
১.এই ক্যাডারের দায়িত্ব মাঠ প্রশাসনে অন্য সব ক্যাডারের মধ্যে সমন্বয় সাধন। তাই সহজেই আপনি সবার মধ্যমণি হয়ে ওঠার সুযোগ পাবেন।
২. সচিবালয়ের উপসচিব ও তার উপরের পদমর্যাদার কর্মকর্তাবৃন্দের ৭৫% ই এই ক্যাডার থেকে নিয়োগ লাভ করেন।
৩. জনগনের সরাসরি সেবায় আত্মনিয়োগ করতে চাইলে এডমিন ক্যাডারের বিকল্প নেই।
৪. অন্য সব ক্যাডারের মধ্যে এডমিন ক্যাডাররাই সর্বোচ্চ ফরেন ডিগ্রী অর্জনের সুযোগ পান। স্কলারশিপ ও প্রচুর।
৫. লজিস্টিক সুবিধা ভাল।
৬. মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিচারিক দায়িত্ব পালন।
৭.সরকারের পক্ষে এই ক্যাডার মাঠ প্রশাসনে নেতৃত্ব দেয়।
৮. প্রেষণে বিভিন্ন সংস্থায় নিয়োগ লাভের সুযোগ।
অসুবিধাঃ
—————
(পুলিশ ও প্রশাসন ক্যাডারের অসুবিধা প্রায় একই)
১. কাজের প্রেসার খুব বেশি। শুক্র-শনি বলে কিছু নেই, কখনো কখনো কর্মক্ষেত্রে ঈদও করতে হতে পারে।
২. ছুটি কম
৩. পদোন্নতি বিষয়ক জটিলতা বিদ্যমান। তবে আশা করা যায় শিগগির এই জটিলতা মিটে যাবে।
৪.রাজনৈতিক চাপের যে বিষয়টি খুব আলোচিত হয়, তবে আমরা যে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনের পথে এগিয়ে চলেছি, সেখানে সকল প্রকার চাপমুক্ত কর্মদক্ষ একটি আমলাতন্ত্রই বিদ্যমান থাকবে, নিশ্চিত থাকুন।
ক্যারিয়ার প্রসপেক্টঃ
——————————
চাকুরির শুরুতে সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দায়িত্ব পাবেন। সেখানে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা থেকে শুরু করে পাবলিক পরীক্ষায় ম্যাজিস্ট্রিয়াল দায়িত্ব পালনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাজে নিয়োজিত থাকবেন।
দুই তিন বছরের মধ্যে এসি ল্যান্ড হিসেবে এলাকাবাসীর সবচেয়ে জটিল সমস্যা- ভূমি সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব আপনার ওপর বর্তাবে।
৭-৮ বছর পর UNO হবেন ( ২৮ তম বিসিএসের অফিসারেরা ইউএনও হচ্ছেন)। উপজেলা লেভেলে মাননীয় সংসদ সদস্যের অনুপস্থিতিতে আপনি হবেন সকল অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে অটো চয়েস। সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে আপনি সকল বিভাগ ও দফতরের মধ্যে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। এরপর আপনি হবেন একটি জেলার ডিসি। আর ডিসি হিসেবে আপনি বলতে গেলে ওই জেলার রাজা। ( যদিও আমি রাজাপ্রজা এই ধারনার বিপক্ষে,আমরা সবাই প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী) সার্বিক প্রশাসনিক দায়িত্ব আপনার হাতে ন্যস্ত থাকবে।
এরপর আপনি সচিবালয়ে যুগ্মসচিব, অতিরিক্ত সচিব এবং সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন।
ট্যাক্সঃ
সুবিধাঃ
———–
১.একজন ট্যাক্স ক্যাডার কর্মকর্তা ‘ এসিসট্যান্ট কমিশনার অব ট্যাক্সেস ‘ পদে যোগদানের মাধ্যমে তার কর্মজীবন শুরু করেন।
সরকারের কর রাজস্ব সংগ্রহ করাই তাঁদের দায়িত্ব।
২.ঝামেলামুক্ত কিন্তু আর্থিক স্বাচ্ছন্দে যারা দিনাতিপাত করতে চান, চাকুরী জীবনের মধ্যে ব্যক্তিগত জীবনকে হারিয়ে খুঁজতে যারা অনিচ্ছুক, তাদের জন্য এ ক্যাডার ভাল চয়েস হতে পারে।
৩.এই ক্যাডারে প্রমোশন গ্রোথ সন্তোষজনক। লজিস্টিক সুবিধা, যেমন গাড়ি ইত্যাদি পর্যাপ্ত।
৪.বেতনভাতার বাইরে বৈধ উপায়ে বড় অংকের টাকা নিয়মিত আয় করতে চান, আপনার জন্য ট্যাক্স ক্যাডারের বিকল্প নেই। আয়কর ফাঁকি যদি ধরতে পারেন, সেটার নির্দিষ্ট পার্সেন্টেজ Grant of Rewards পাবেন। ৫.ট্যাক্সেশন ও কাস্টমস দুটো ক্যাডারই এনবিআরের অধীনে কাজ করলেও ট্যাক্স ক্যাডাররা কাস্টমস ক্যাডারদের তুলনায় NBR এর মেম্বার বেশি হন।
অসুবিধাঃ
————-
১.উচ্চবিত্ত সমাজ আপনাকে যথেষ্ঠ সমীহের চোখে দেখলেও পুলিশ বা প্রশাসন ক্যাডারের মতো পাওয়ার প্র্যাকটিসের সুযোগ নেই।
২.আয়কর রিটার্ন এর সময় খুব ব্যস্ত সময় পার করতে হবে, তখন প্রায়ই নাওয়া খাওয়া ভুলে যাওয়ার মতো অবস্থায় পড়তে হতে পারে।
৩.ঢাকার বাইরে পোস্টিং এর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে।
কাজের সফট পরিবেশ, আর্থিক- অনার্থিক সুযোগ সুবিধা মিলিয়ে এটি সিভিল সার্ভিসের অন্যতম আকর্ষণীয় ক্যাডার হিসেবে পরিগণিত হয়।
আনসারঃ
সুবিধাঃ
———–
১.অন্যান্য ক্যাডারের তুলনায় এই ক্যাডারের সদস্যরা অনেক নির্ঝঞ্ঝাট, চাপমুক্ত চাকুরী জীবন অতিবাহিত করতে পারেন।
২.রেজিমেন্টাল লাইফ ( স্যালুট, ইউনিফরম, অস্ত্র) যাদের পছন্দ, তারা নিশ্চিন্তে এই ক্যাডারটিকে পছন্দ তালিকার ওপরের দিকে রাখতে পারেন।
৩.লজিস্টিক সুবিধা সন্তোষজনক।
৪.সার্বক্ষণিক গাড়ি ও বাসস্থান সুবিধা পাবেন।
৫.প্রমোশন গ্রোথ খুব ভাল।
৬.র্যাব, এসএসএফ সহ সকল আন্তঃবাহিনী ( সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিমান ও নৌবাহিনী) ফোর্সে কাজ করার সুযোগ।
৭. পুলিশের বাইরে একমাত্র এই ক্যাডারের অফিসাররা রেশন ও UN মিশনে অংশগ্রহণের সুযোগ পান।
অসুবিধাঃ
————-
১.উপরের দিকের পদসমূহে সেনাবাহিনীর অফিসাররা দায়িত্ব পালন করেন। তাই প্রমোশন একটা পর্যায়ে এসে আটকে যায়।
২. এ বাহিনী পুলিশের মতো আইন প্রয়োগকারী কর্তৃপক্ষ নয়।
নিরীক্ষা ও হিসাবঃ
সুবিধাঃ
———–
১.পুলিশ ও এডমিন ক্যাডারের মতো আইনপ্রয়োগের ক্ষমতা না থাকলেও বেতনভাতা, পেনশন ও আর্থিক বিষয়াদি নিরীক্ষণের ক্ষমতা থাকায় অন্য সব ক্যাডাররাই এই কাডারকে সম্মানের চোখে দেখে থাকে।
২. এই ক্যাডার খুব ভাল আবাসিক ও পরিবহণ সুবিধা পেয়ে থাকে, যা অন্য অনেক ক্যাডারের জন্যই ঈর্ষনীয়।
৩. কাজের ক্ষেত্রে অনৈতিক চাপ ও তদবির কমই ফেস করতে হয়।
৪.প্রমোশন খুব ভাল।
৫. অফিসারের সংখ্যা অত বেশি নয় বলে লজিস্টিক সুযোগসুবিধা পর্যাপ্ত।
৬. দেশবিদেশে প্রচুর ট্যুর এন্ড ট্রেনিং।
৭. গ্রামে গঞ্জে চাকুরী করার প্রয়োজন পড়বে না।
অসুবিধাঃ
————–
১. সাধারণ মানুষ এই ক্যাডারের কর্মপরিধি সম্পর্কে কমই অবগত থাকে। তাই প্রায়শ তাদেরকে বলে বুঝাতে হবে যে আপনিও একজন বিসিএস ক্যাডার।
২. বিশেষ বিশেষ সময় ( যেমন জুন ক্লোজিং) ব্যস্ততা প্রচণ্ড রকম বেড়ে যায়।
৩. যেহেতু অন্যের ভুলত্রুটি ধরাই কাজ, তাই সবার কাছে এই ক্যাডার কাবাব মে হাড্ডি, প্রিয়পাত্র হবার সুযোগ কম।
ইকনমিকঃ
সুবিধাঃ
———–
১. যেহেতু এই ক্যাডারের কর্মকাণ্ড মূলত সচিবালয় কেন্দ্রিক, তাই যারা ঢাকায় থাকাকেই সবচেয়ে অগ্রাধিকার দেন,তাদের জন্য এটাই হতেই পারে ফার্স্ট চয়েস।
২. পদোন্নতির সুযোগ ভাল।
৩. বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজ করার সুযোগও হরহামেশাই মিলেলে থাকে।
৪. ফরেন ট্রেনিং, হায়ার এডুকেশন, ট্যুর এত্ত বেশি যে, বিমান চড়তে চড়তে ( সরকারের পয়সায়) বিরক্তি এসে যেতে পারে(!!!)
৫. একাধিক ইকনমিক ক্যাডার কর্মকর্তা জানিয়েছেন, খুব শিগগির এই ক্যাডার প্রশাসন ক্যাডারের সাথে মার্জ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেটা হলে আপনি ইকনোমিক ক্যাডারের মাধ্যমে আসলে প্রশাসন ক্যাডারেই ঢুকলেন। এন্ড্রয়েড অ্যাপ – জব সার্কুলার
অসুবিধাঃ
————-
১.ঊর্ধ্বতন পদ এডমিনের। তাই প্রমোশন একটা পর্যায়ে আটকে যাবে।
পররাষ্ট্র ক্যাডারঃ
আপনি যদি বহির্বিশ্বে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে আগ্রহী হন, পাশাপাশি কূটনীতিক পাসপোর্ট ব্যবহার করে বিদেশের মাটিতে বিশেষ সম্মান লাভ করতে চান, তাহলে পররাষ্ট্র ক্যাডারে যোগ দেওয়ার বিকল্প নেই। তবে এই মহার্ঘ সুযোগটি বগলদাবা করতে হলে বিসিএসের চুড়ান্ত মেধাতালিকায় আপনার স্থান একেবারে শুরুর দিকেই নিশ্চিত করতে হবে।যাদের শুধু দেশ বিদেশ ঘুরেই মন ভরে না, ক্ষমতা প্রয়োগ করতেও মন চায় তাদের এ ক্যাডার চয়েস না দেওয়াই ভাল। এ ক্যাডার চয়েস যারা দিবেন বৈশ্বিক ঘটনাবলি ও ইংরেজিভাষার ওপর আপনার ভাল দখল আছে, বিষয়টি নিশ্চত করুন। এ ক্যাডার থেকে আপনি সচিবও হতে পারবেন।এই সার্ভিসকে বাংলাদেশের গ্ল্যামারাস চাকুরিগুলোর অন্যতম হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
সুবিধাঃ
————
১. বিদেশে পোস্টিং পেলে কূটনৈতিক সুবিধা, বিশাল অংকের স্যালারির পাশাপাশি উপভোগ্য জীবন যাপনের সুযোগ পাওয়া যায়;
২. আপনি যে দেশে কর্মরত থাকবেন,সেখানে নিজের পরিবার পর্যন্ত নিয়ে যেতে পারবেন। আপনার পরিবারের সদস্যবর্গ কূটনীতিক না হয়েও কূটনৈতিক সুযোগসুবিধা পাবেন।
৩.আপনার সন্তান বিদেশে পড়াশুনা করে ছোটবেলা থেকেই বিশ্বনাগরিক হয়ে বেড়ে উঠুক, বাবা/মা হিসেবে আপনি তা নিশ্চয়ই চাইবেন।
৪.আপনি যেহেতু বিদেশে দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন, তাই সরকার নিজের গরজেই আপনাকে বিশ্বজোড়া নামীদামী প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা করাররার সুযোগ করে দিবে।
৫.এমনকি দেশে কর্মরত থাকলেও বিদেশে অনেক ট্যুর পাবেন।
৬.পোস্টিং প্রাপ্ত দেশের উপরমহলে আপনার যেমন অবাধ যাতায়াত থাকবে, তেমনি আমাদের দেশের রথীমহারথীরা যখন ওই দেশ সফরে যাবেন, তখন তাদের সাথেও ঘনিষ্ঠ ভাবে মেশার সুযোগইপাবেন।
৭.দেশ থেকে আপনি এমনকি আপনার কাজের লোকও বাছাই করে আপনার পোস্টিং প্রাপ্ত দেশে নিয়ে যেতে পারবেন।
৮.যেহেতু বিভিন্ন দেশে নিত্যনতুন এম্ব্যাসি খোলা হচ্ছে, তাই নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র খোলা ও পদ সৃজনের সাথে প্রমোশন গ্রোথ বাড়বে নিঃসন্দেহে।
৯.সৎভাবে মানসম্পন্ন জীবনযাপন করতে পারবেন
১০.জাতিসংঘ ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থায় পোস্টিং ( প্রেষণ) এর সুযোগ পাবেন।
অসুবিধাঃ
————–
১.খুব কম পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রচার হয়ে থাকে, তাই এই ক্যাডারে সুপারিশকৃত হওয়া অন্য সকল ক্যাডারের তুলনায় কঠিন।
২.যেহেতু জনবল অনেক কম, কাজের চাপ অনেক বেশি;
৩.যাদের উন্নত, উপভোগ্য জীবনেই মন ভরে না, পাওয়ার প্র্যাকটিস করার বাসনাও জাগে, তাদের জন্য এই ক্যাডার নয়।
৪.আপনি যে রাতদিন খেটে দেশের স্বার্থ রক্ষা করে চলেছেন, তার স্বীকৃতি দেশের মানুষের কাছে থেকে কদাচিৎই পাবেন। কারন দেশের মানুষ চোখের সামনে প্রতিনিয়ত এএসপির জঙ্গিবিরোধী অপারেশন বা ম্যাজিস্ট্রেটের মোবাইল কোর্ট দেখে যাচ্ছেন, আপনার ত্যাগের ইতিহাস তাদের কাছে অজানাই রয়ে যায়।
সবার জন্য শুভকামনা রইল।
নিয়োগ পরীক্ষার ফ্রি সাজেশন পেতে জয়েন করুন
https://www.facebook.com/groups/780572335479000/
Shamim Anwar
এএসপি (RAB) ৩৪তম বিসিএস (পুলিশ)
[বর্তমানে র্যাব-৯ এর এএসপি হিসেবে কর্মরত]
প্রশ্ন: আমি বিসিএস আবেদন ফরমে স্নাতক পরীক্ষার রেজাল্ট লিখতে ভুল করেছি।... আরো পড়ুন
প্রিলিতে সবসময় লিখিতের সর্ট প্রশ্নাবলী থেকে আসে। ১। কাহ্নপা কে ছিলেন?... আরো পড়ুন
কম সময়ে কীভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যায়, এ বিষয়ে কিছু পরামর্শ তুলে... আরো পড়ুন
র্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ‘বিসিএস’ এমন একটা শব্দ যার সাথে অনেক যুবকের... আরো পড়ুন
বিসিএস প্রিলি সিলেবাস বিশ্লেষণ বাংলাদেশটা এভাবে পড়লে কেমন হয়? খুব খুব... আরো পড়ুন
বিসিএস ক্যাডার হওয়া একজন চাকুরি প্রার্থীর কাছে খুবই আরাধ্য বটে। কিন্তু... আরো পড়ুন