আজ বুধবার ২০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
পটুয়াখালীর ছেলে প্রযুক্তি প্রকৌশলী জাহিদ সবুর। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে জয় করলেন বিশ্বকে। তিনি হলেন গুগলের প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার। গত ২ মে তিনি পদোন্নতি পান। ২০০৭ সালে গুগলের ব্যাক অ্যান্ড সিস্টেম ডেভেলপমেন্ট প্রকল্পে ভারতের বেঙ্গালুরু অফিসে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন জাহিদ।
ছয় মাস পর গুগলের ক্যালিফোর্নিয়ার অফিসে যোগদান করেন তিনি। বিশ্বে গুগলের লক্ষাধিক কর্মীর মধ্যে ২৫০ জন প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার কর্মরত রয়েছেন। যাদের মধ্যে জাহিদ সবুর একজন। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে মেধা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে সেরাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন জাহিদ সবুর। যোগ্যতার মানদণ্ডে বাঙালিরাও যে পিছিয়ে নেই তারই প্রমাণ গুগলের প্রিন্সিপাল ইঞ্জিনিয়ার (ডিরেক্টর) পদে সদ্য পদোন্নতি পাওয়া এই বাংলাদেশি।
জাহিদ সবুরের পিতা পটুয়াখালীর বাসিন্দা ড. মো. শাহজাহান সৌদি আরবে কিং ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ছিলেন। সেই সূত্রে জাহিদের শৈশব কেটেছে সৌদি আরব। মা লুৎফুন্নেসা বেগম দেশ ছাড়ার আগে পটুয়াখালী সরকারি মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ পদে কর্মরত ছিলেন। সৌদি আরব থেকে সাত বছর বয়সে দেশে ফিরে ঢাকায় অক্সফোর্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেন জাহিদ
ছোটবেলা থেকে শুধু পড়ালেখার মধ্যেই নিজেকে আটকে রাখেননি জাহিদ সবুর। স্কুলের বিজ্ঞান মেলায় অংশ নেওয়া, ব্যাডমিন্টন খেলা, বোনের সংগ্রহের বাংলা বই পড়া আর বন্ধুদের সঙ্গেও দারুণ সময় কাটিয়ে উপভোগ করেছেন শিক্ষাজীবনকে। মাধ্যমিকের সাদামাটা রেজাল্টের পরও বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে উদ্যোক্তাও হতে চেয়েছিলেন জাহিদ সবুর। সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে নিরলস পরিশ্রম করে গেছে।।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) থেকে সর্বোচ্চ সিজিপিএ নিয়ে স্নাতক পাস করেন জাহিদ। পেয়েছেন প্রায় সব একাডেমিক সম্মাননা। জাহিদ সবুর দ্বিতীয় সেমিস্টার থেকেই ফুল স্কলারশিপে পড়ে ধারাবাহিকভাবে নিজের মেধার স্বাক্ষর রেখেছেন।
ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে এসেই কম্পিউটারের প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ আর সিস্টেম ডিজাইন এসবের হাতেখড়ি। কোনো কিছু সৃষ্টির যে অপার আনন্দ, তা পুরোপুরিই উপভোগ করেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এবং পুরস্কারও জিতেছেন।
পড়াশোনা শেষ করে বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদন করতে জিআরইও দিয়েছিলেন তিনি। আমেরিকার সেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছয়টিতে আবেদন করে চারটিতে ডাক পান ফুল ফান্ডিংসহ স্কলারশিপের জন্য। কিন্তু সে মুহূর্তে গুগলে কাজ করার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি বলে ঢুকে পড়েন কর্মক্ষেত্রে। গুগলে কাজ শুরু করেন তৃতীয় গ্রেডে। অথচ এখন অষ্টম গ্রেডে জায়গা করে নিয়েছেন।
কর্মজীবনের শুরুতে তিনি ভারতে কাজ করেছেন গুগলের ব্যাক অ্যান্ডের একটি প্রতিষ্ঠানে সিস্টেম ডেভেলপার হিসেবে। এর ছয় মাস পর সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে যোগ দেন ক্যালিফোর্নিয়ায় গুগলের সদর দপ্তরে। এখন কাজ করছেন গুগলের জুরিখ দপ্তরে।
জাহিদ সবুরের সাফল্য থেকে বর্তমান তরুণরা শিক্ষা নিতে পারে, সাফল্যের জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধার দরকার নেই বরং অধ্যবসায় আর পরিশ্রমই পারে লক্ষ্যে পৌঁছে দিতে। প্রযুক্তি খাতে জাহিদ সবুরের এই সাফল্য লক্ষ তরুণকে আগামীর পথ দেখাবে। দেশ যাবে এগিয়ে।
সফলতার আরো গল্প পড়ুন
পড়ালেখায় দ্রুত উন্নতি করার ১০টি কার্যকরী টিপস! ১। প্রতিদিন ভোরে ঘুম... আরো পড়ুন
ছোটবেলা থেকে খুব দুরন্ত ছিলাম। একাধারে শুধু পড়াশোনা করব আর দুনিয়ার... আরো পড়ুন
রওশনা জাহান লিজা: আমি মো. আবুল কাশেম ও মোছা. ছালেহা বেগমের দ্বিতীয়... আরো পড়ুন
“সায়েন্স নিউজ” নামের একটি গণ’মাধ্যমের বিচারে বাছাই করা ১০ বিজ্ঞানীর একজন... আরো পড়ুন
বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মোহাম্মদ সামিউল আলম গুগলে চান্স পাওয়ার পর চলে গিয়েছিলেন... আরো পড়ুন
মো. আল আমিন সরকার। চট্টগ্রাম কলেজের এই ডাবল বিসিএস ক্যাডার হয়েছেন।... আরো পড়ুন