আজ বুধবার ২০শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ ৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রফেসর ড. সানিয়াত সাত্তার। তিনি বর্তমানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের প্রফেসর। মেধা আর যোগ্যতায় তিনি অল্প বয়সেই ইংরেজি বিভাগের প্রধান হয়েছেন। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে সাহিত্যে জাপানে মনবুশো স্কলারশিপ পাওয়ারও গৌরব অর্জন করেছেন। তার সফলতার গল্পটা এখানেই শেষ নয়। তিনি মেধা তালিকায় বিসিএস পরীক্ষায় প্রথম হয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতার পেশাকে বেছে নিয়েছেন। মাল্টি ট্যালেন্টেড ওই শিক্ষক গল্প লিখেও পেয়েছেন জাতীয় পুরস্কার। ছবি
আঁকায় সিদ্ধহস্ত তিনি। জানা যায়, সানিয়াতের বাবা প্রফেসর ড. এম এ সাত্তার বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক। আর মা প্রফেসর ড. আফরোজা সাত্তার ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজের প্রাক্তন প্রিন্সিপাল। দুই ভাইবোনের মধ্যে সানিয়াত বড়। ছোট বোন ডা. ক্লারা সালমিন সাত্তার চিকিৎসক। রাজধানী ঢাকায় জন্ম হলেও মাত্র ৬ মাস বয়সেই মা-বাবার সঙ্গে চলে যেতে হয় ফিনল্যান্ডে। সানিয়াতের বাবা-মা সেখানে গিয়েছিলেন পিএইচডি করতে। তাই সানিয়াতের মধুর শৈশব
স্মৃতি বলতে যা বোঝায় তার পুরোটাই ফিনল্যান্ডের। ১০ বছর বয়সে বাংলাদেশে ফিরে ঘোর বিপদে পড়ে যান ছোট্ট শিশু সানিয়াত। ইংরেজি ও ফিনিশ ভাষায় কথা শেখা সানিয়াত বাংলা বলতে না পারায় স্কুলে ভর্তি করা হলে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে ভাববিনিময় করতে পারতেন না। যা বলতেন তাতেই হাসাহাসি করতো সানিয়াতের সহপাঠীরা। বিচ্ছিন্ন, বিষণ্ণ, একা সানিয়াতের স্কুল জীবনের স্মৃতিটা তাই মোটেও সুখকর ছিল না। এরপর সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন রংপুর ক্যাডেট কলেজে। এরই
মাঝে ১৯৯৪ সালে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসএসসি ও ১৯৯৬ সালে স্টার মার্কস নিয়ে এইচএসসি পাশ করেন। এরপর ভর্তি হন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগে। ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়েই ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হন সানিয়াত। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পর সানিয়াতের জীবনে আসে বিশাল পরিবর্তন। সেসময় অনেক বন্ধু গড়ে ওঠে তার। বন্ধু আর পড়াশোনা এভাবেই কেটেছে তার সময়। বিভাগে প্রথম শ্রেণীতে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করে দেখিয়ে দিয়েছেন তিনি
কতটা মেধাবী। মাস্টার্সে অধ্যয়নকালে সহপাঠীদের সবাইকে বিসিএস দিতে দেখে আগ্রহী হন সানিয়াত। তবে বিভাগের পড়ায় বেশি মনোযোগী হওয়ায় অন্যদের মত প্রস্তুতি নিতে পারেননি তিনি। তা সত্ত্বেও বিসিএসে তাক লাগানো সফলতা আসে তার। ২৪তম বিসিএসের ফল প্রকাশের পর প্রশাসন ক্যাডারে নিজের নামটি সবার প্রথমে দেখতে পান সানিয়াত। বিসিএসের ফল প্রকাশের মাস দু’য়েক আগেই সানিয়াত নিয়োগ পান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার পদে। সেসময় চারপাশের সবাই
প্রশাসন ক্যাডারে যোগ দিতে বললেও সানিয়াত নিজের সিদ্ধান্তেই থাকেন অনড়। ১৩ বছরের শিক্ষকতা জীবনের শুরু ২০০৪ সালে। তিন বছর লেকচারার থাকার পর জাপানে যান পিএইচডি করতে। সেখান থেকে ৫ বছর পর ফিরে ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান পদের দায়িত্ব পান। ৩ বছর বিভাগীয় প্রধান থাকার পর ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে যান পোস্ট ডক্টরেট করতে। সেখান থেকে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জনের পর প্রফেসর পদে পদায়ন করা হয় তাকে। মাত্র ৩৬ বছর বয়সেই প্রফেসর হন
তিনি। তরুণদের উদ্দেশ্যে সানিয়াত বলেন : সে কাজটিই করতে হবে আমি যেটা পারবো বলে জানি। অার সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ পরিশ্রম ও মেধা দিয়ে কাজটি করার পরামর্শ দিয়েছেন সানিয়াত। জীবনে শুধু নম্বর প্রাপ্তির জন্য পড়লে সফলতা অসম্ভব। ছেলে-মেয়েরা পড়াশোনা শুরুই করে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনা নিয়ে। আর সেটিই তারা বয়ে বেড়ায় বছরের পর বছর। কোন বিশ্ববিদ্যালয়, প্রতিষ্ঠান, বা কোন সাবজেক্টকে ছোট করে দেখার কোন অবকাশ নেই। যে যেই অবস্থানে অাছে সেখান থেকেই
ভাল করা সম্ভব। আমরা শুরুটাই করি বৈষম্য দিয়ে, তাই আমাদের উন্নয়নের গতিটাও অনেক ধীর। যে যেখানে পড়ছে, যা পড়ছে সেটাই যদি ভালভাবে পড়ে তাহলেই বিসিএস, ব্যাংক কিংবা চাকরির পরীক্ষা সব জায়গাতেই ভালো করা সম্ভব। নিজের পঠিত বিষয়কে অবহেলা করে অন্য বিষয়ের প্রতি বেশি মনোযোগী হয়ে সফলতা অর্জন কঠিন বলে মনে করেন তিনি। পড়াটা শুধু চাকরি পাওয়ার জন্য না পড়ে অনুরাগ নিয়ে পড়ার পরামর্শ দিয়েছেন সানিয়াত। সানিয়াত বিশ্বাস করেন, জীবনে সফলতার মূলমন্ত্রই হল আত্মতৃপ্ত থাকা।
[কার্টেসি : চ্যানেলআই]
বিসিএস, প্রাইমারি, নিবন্ধন, রেলওয়ে, CGA, NSI ও অন্যান্য চাকরির সাজেশন পেতে জয়েন করুন এই গ্রুপে
ভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করা আদিত্য আজ ৭ম বারের মত ভাইভা দিয়ে... আরো পড়ুন
নিজের উপযোগী সঠিক ক্যাডার চয়েস নির্ধারণ বিসিএস পরীক্ষার আবেদন প্রক্রিয়ায় প্রথম... আরো পড়ুন
বিসিএস ভাইভা মার্ক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (#বিসিএস) হলো বাংলাদেশ সরকারের দাপ্তরিক... আরো পড়ুন
৩৪তম বিসিএস পরীক্ষায় পররাষ্ট্র ক্যাডারে প্রথম হয়েছেন ওয়ালিদ বিন কাশেম ৩০তম... আরো পড়ুন
কিভাবে নেবেন গণিত প্রস্তুতি? গনিত প্রস্তুতি আমরা তিন ভাগে ভাগ করতে... আরো পড়ুন
রাবেয়া আক্তার সাখী নোয়াখালী সরকারি কলেজে প্রভাষক পদে কর্মরত আছেন। তার... আরো পড়ুন